পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায় শতভাগ কার্যকরী।
বর্তমানে আমাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে যে সাধারণ সমস্যা দেখা যায় সেটি হলো পড়ায় মন বসে না। মন বসে না পড়ার টেবিলে এই সমস্যার সমাধান নিয়ে আজকের পোস্ট এ তোমাদের সাথে আলোচনা করবো।
পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায় |
যদি তুমি বিষয়গুলো বুঝে নিজের মধ্যে লালন করো তাহলে আমি আশা করছি আজকের পর থেকে তোমার পড়াশুনার প্রতি মনোযোগ বেড়ে যাবে। পড়ায় মন বসবে। আজকের টপিক " পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায় " যেগুলো বৈজ্ঞানিক ভাবেই কার্যকরী।
পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায় জেনে নিন
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, পড়াশুনায় মন বসানোর উপায় গুলো এক নজরে দেখে নেই তারপর সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায় হলো:
- ১/ একটি টার্গেট তৈরি করে পড়াশোনা করা
- ২/ উপযুক্ত সময় একটু বিরতি নাও
- ৩/ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকো
- ৪/ চারপাশ পড়ার পরিবেশ তৈরি করো
- ৫/ বেশি বেশি পানি পান করা খাওয়াদাওয়া ভালোমত করা
- ৬/ নিজেকে পুরস্কার দেওয়া
- ৭/ রাত জেগে থাকার অভ্যাস ত্যাগ করা
তাহলে প্রিয় শিক্ষার্থীরা তোমরা জানতে পড়লে পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায়, এখন আমরা এইগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। কারণ তোমরা অনেকেই বুঝোনি এইগুলা দিয়ে কিভাবে পড়াশোনায় মন বসাতে হয়। তাই চলো বিস্তারিত জেনে নেই।
একটি টার্গেট তৈরি করে পড়াশোনা করা
পড়তে বসার আগে একটা টার্গেট নিয়ে পড়া শুরু করলে আমাদের মস্তিষ্ক ওই টার্গেট এর প্রতি মনোযোগী থাকে। তাই তুমি যদি একটা টার্গেট তৈরি করে পড়া শুরু করো তাহলে তোমার মাথায় একটি চিন্তা থাকবে যে তোমার টার্গেট পূরণ করতে হবে।
ধরো, আজকে তুমি টার্গেট করলা এই এই সাবজেক্ট এর এই এই অংশ পরে ফেলবা। এই চিন্তা মাথায় নিয়ে পড়তে বসলা তাহলে তোমার মধ্যে একটা চাপ থাকবে আর চাপ এই সব সোজা হয়। তো বুঝতেই পারছো তোমাকে টার্গেট নিয়ে পড়তে হবে।
টার্গেট ছাড়া পড়াশুনা করা হলো একটা জাহাজ এর মাঝ সামুদ্রে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ানোর মতো। কিন্তু সেই জাহাজের নাবিক যদি টার্গেট করে যে আমার এই দিকে যেতে হবে না এই স্থানে যেতে হবে তাহলে সে সবসময় দেখবে সে তার টার্গেট পূরণ করছে কিনা। ঠিক তেমন ভাবে টার্গেট তৈরি করে পড়াশোনা করতে হবে।
আবার টার্গেট রাখবা ক্লাস এর টপ লিস্টে থাকবো, বন্ধুদের থেকে ভালো রেজাল্ট করবো। কোচিং এর পরীক্ষায় সেরা পারফরমেন্স করে দেখাবো। আশা করি বুঝতে পেরেছো।
উপযুক্ত সময় একটু বিরতি নাও
অনেক্ষণ সময় ধরে পড়তে থাকলে দেখবা কেমন যেনো একঘেয়েমি লাগছে। আর আমরা একঘেয়েমি লাগলেই পড়া বাদ দিয়ে এমন এমন কাজে যোগ দেই যে পড়ার সময় পার হয়ে যায় বুঝতেই পারি না। তো, পড়তে পড়তে যদি খারাপ লাগে তাহলে তুমি কি করবা? তুমি একটু হাটাহাটি করতে পারো অথবা যে বই পড়তেছিলা সেটি বন্ধ করে একটা গল্পঃ বা রসের বই পড়তে পারো।
এতে তুমি পড়ার সাথেই থাকবা তোমার মস্তিষ্ক ভেবে নিবে পড়াশোনা একটি গুরুত্তপূর্ণ কাজ। আবার তুমি একটু ব্যায়াম করে নিতে পারো পড়তে পড়তে ভালো না লাগলে। ব্যায়াম করলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে তোমার নিউরন জাগ্রত হবে তাই তুমি এই কাজটি করে ভালো ফল পেতে পারো। বেশি খারাপ লাগলে এলার্ম সেট করে একটু ঘুমিয়ে নিতে পারো।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকো
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমাদের মধ্যে অন্যতম একটা সমস্যা হলো কিছুক্ষণ পর পর ই ফোন ধরো। আর তুমি ফোনের দেশেই হারিয়ে যাও আর ফিরে আসার পথ খুঁজে পাও না। পড়তে পড়তে বিরক্ত হলেই তোমরা ফোন ধরো। ফেসবুক ঘাটতে থাকো আর স্ক্রল করতেই থাকো করতেই থাকো। এভাবেই সময় কেটে যায়।
তুমি যখন ফোন ধরো তোমার পছন্দের জিনিসগুলো তোমার সামনে আসতে থাকে আর তোমার মস্তিষ্ক থেকে ডোপামিন নিঃসরণ হতে থাকে। যার কারণে তোমার ভালো লাগতে থাকে কিন্তু ফোনের আলোতে তোমার মাথা ব্যাথা সহ আরো নানান সমস্যা হয় যেটা তুমি তাৎক্ষণিক বুঝতে পারো না। যখন তোমার ফোন টিপা হয়ে যায় বা খারাপ লাগে তখন তুমি এতটাই তিক্ত ভাবে বুঝতে পারো যে তখন আর পড়াশোনা করার মুড ই থাকে না।
তাই তোমার কখনোই উচিৎ না পড়তে বসার পরে আর পড়া শেষ হওয়ার আগে ফোন ধরা , ফেসবুকিং করা ইত্যাদি। আশা করি বুঝতে পেরেছো।
চারপাশ পড়ার পরিবেশ তৈরি করো
প্রিয় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা খুব সহজ কাজ নয়। মাথা খাটিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। এর জন্য চাই নিরিবিলি পরিবেশ। এই জন্য তোমাকে খেয়াল রাখতে হবে আশপাশের সবকিছু ঠিক আছে কিনা।
শব্দহীন একটা পরিবেশ তৈরি করে পড়তে বসার চেষ্টা করবে। যতটা সম্ভব নিরিবিলি এর ঠান্ডা পরিবেশে পড়ার চেষ্টা করবে। যেখানে যেভাবে তুমি স্বাচ্ছন্দ বোধ করো সেখানেই তুমি পড়াশোনা করতে পারবে।
পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায় শতভাগ কার্যকরী |
বেশি বেশি পানি পান করা খাওয়াদাওয়া ভালোমত করা
আমরা ছোটবেলা থেকেই জানি পানির অপর নাম জীবন। বেশি বেশি পানি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর ঠান্ডা থাকে অর্থাৎ শরীরের তাপমাত্রা বজায় থাকে। আমরা যখন পড়াশোনা করি তখন আমাদের ব্রেন প্রচুর পরিমাণে কাজ করতে থাকে যার ফলে আমাদের দেহের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
আর এর কারণে আমাদের অনেক সময় বিরক্তি বিরক্তি ভাব আসে পড়াশোনার প্রতি অমনোযোগী ভাব আসে শরীর খারাপ লাগে। এজন্য আমরা যদি বেশি বেশি পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারি তাহলে আশা করি এই সমস্যাটা আর হবে না পড়ার প্রতি মন বসবে।
নিজেকে পুরস্কার দেওয়া
মাঝেমধ্যে আমরা আমাদের কাজ সম্পন্ন করি এবং আমাদের ভালো লাগে আর তখন শুধু ভালো লাগলেই হবে না তখন নিজেদেরকে পুরস্কৃত করতে হবে এবং সেটা নিজেদেরকেই। ধরো তুমি আজকের পড়া খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছ বা কোন একটা পরীক্ষায় ভালো পারফরম্যান্স করেছ কিন্তু সেখান থেকে কোন পুরস্কার বা সাধুবাদ দেয় নি তোমাকে।
তো এখন তোমার কাজ হবে নিজেকে নিজেই পুরস্কৃত করা। এজন্য তুমি তোমার পছন্দের খাবার খেতে পারো বা নিজেকে একটু বিশ্রাম দিতে পারো বা কোথাও একটু ঘুরতে যেতে পারো ইত্যাদি ইত্যাদি তোমার মত করে নিজেকে পুরস্কৃত করতে পারো অবশ্যই সেটা পজেটিভ হতে হবে।
তাই বলে এই না যে তোমার ফোন টিপতে ভালো লাগে তুমি ফোন টিপতে বসে যাবে তোমাকে অবশ্যই পজিটিভ পুরস্কার দিতে হবে নিজেকে। এভাবে করে তোমার নিজের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে এবং তুমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবা আর তোমার পড়াশোনায় মন বসবে।
রাত জেগে থাকার অভ্যাস ত্যাগ করা
অনেকেই আছো সারাদিন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ঝিমিয়ে কাটিয়ে রাত জেগে পড়াশোনা কর। কিন্তু তুমি কি জানো রাত মহান আল্লাহ তা'আলা ঘুমানোর জন্য সৃষ্টি করেছেন। এজন্য তোমাকে যে সময় যে কাজ সে সময় সে কাজ করতে হবে নতুবা তোমার কোন কাজে মন বসবে না।
অনেকেই যুক্তি দেয় যে রাত নিরিবিলি থাকে তখন পড়লে পড়া তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়। কিন্তু এগুলোই কোন যুক্তি নেই। তুমি দিনে সন্ধ্যায় এবং সন্ধ্যার পর পড়লে এবং সকালে ফজরের নামাজ পড়ে পড়তে বসলে তাতেই অনেক পড়া যায়।
অন্যথায় তুমি যদি রাত জেগে পড়াশোনা করো তাহলে তোমার পুরো দিনটাই আলসেমিতে যাবে কোন দিনটাই ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে যাবে। এজন্য অবশ্যই রাত্রি জেগে পড়াশোনা করার বদ অভ্যাসটা থাকলে এটি চেঞ্জ করে ফেলবে।
পড়াশোনায় মন বসানোর দোয়া
পড়াশোনায় মন বসানোর আরেকটি ধর্মীয় উপায় হল দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে চাওয়া পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য। পড়াশোনায় মন বসানোর দোয়া হলো
" সুবহানাকা লা ইলমা লানা ইল্লা মা আল্লামতানা, ইন্নাকা আনতাল আলিমুল হাকিম।"
তোমরা এই দোয়াটি আমল করতে পারো, সর্বোপরি তোমার বিশ্বাস রাখতে হবে নতুবা কোন কিছুই কাজ হবে না এবং প্রবল সদিচ্ছা থাকতে হবে। এটাই হলো পড়াশোনায় মন বসানোর মন্ত্র।
আমাদের শেষ কথা
উপরে উল্লেখিত যে সকল পরামর্শ দিয়েছে সেগুলো ঠিকঠাক মতো করে যাও দেখবে পড়াশোনার প্রতি তোমার মন বসবে। সবগুলো কাজ ঠিকমতো করতে হবে কোনটি বাদ দিলে হবে না। আর তোমার কোন মতামত পরামর্শ বা যে কোন প্রশ্নের জন্য আমাদের পোস্টের নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারো, আজ এই পর্যন্তই।
💡 আরো পড়ুন : ব্যাপন চাপ ঘাটতি কাকে বলে।
Telegram GroupJoin Now
Facebook PageFollow Now
পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায় জানতে চেয়েছিলাম, এই পোস্টটি পড়ে জানতে পারলাম ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ, আমাদের সাথেই থাকুন।
পড়াশোনায় মন বসে না কেন জানতে চাইছিলাম পোস্টটি পড়ে জানতে পারলাম।
ধন্যবাদ, আমাদের সাথেই থাকুন।