ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম 2024 (বিস্তারিত পোস্ট) | Eid al-Fitr 2024 in Bangladesh


আসসালমুআলাইকুম, আশা করি সকলে আল্লাহর অশেষ রহমতে এই পবিত্র রমজান মাসে সুস্থ আছেন ভালো আছেন। প্রিয় পাঠক, আপনারা অবগত যে হিজরি বর্ষপঞ্জীকা অনুযায়ী রমজান মাসের শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে ঈদুল ফিতর উৎসব পালন করা হয়।

সেই হিসেবে ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এপ্রিল মাসের ১১ তারিখে ঈদ উল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। অস্ট্রেলিয়ায় ঈদ উল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে ১০ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে। বাংলাদেশে ঈদ উল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে ১১ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে।

২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরের নামাজ এপ্রিল মাসের ১১ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। এইজন্য আমাদের জানতে হবে ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম কি। 

আপনি যদি ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম না জানেন তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্যই। অতি সুন্দর ও সাবলীল ভাবে নিচে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম সমুহ, তাই মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ন লেখাটি পড়ুন।

ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম সমুহ জেনে রাখুন

পবিত্র রমজান মাসের শেষে ঈদ উল ফিতরের নামাজ আদায় করতে হয়। এই নামাজের নিয়ম অন্যান্য নামাজের নিয়ম থেকে কিছুটা আলাদা।

ঈদুল ফিতরের নামাজে প্রথমে নিয়ত করে তাহরীমা বেধে সানা পাঠ করতে হয়। এরপর, তিনবার 'আল্লাহু আকবর' বলে  তাকবীর বলা। প্রথম দুইবার কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দেওয়া এবং তৃতীয়বার হাত বাঁধা। এরপর সাধারণ নামাজের মত করে সবশেষে সেজদা ও আখেরী বৈঠকের মাধ্যমে ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষ করা। 

ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম বিস্তারিত আলোচনা পড়ুন

উপরের লেখাটি থেকে আপনারা ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম সংক্ষেপে জানতে পেরেছেন এখন আপনারা পূর্ণাঙ্গ নিয়ম জানতে পারবেন। ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম হলো -

  1. ইমামের পিছনে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো। এরপর নিয়ত করে আল্লাহু আকবর বলে হাত তুলে তাহরীমা বাঁধা। তারপর সম্পূর্ন সানা পাঠ করা।
  2. আবার তিনবার আল্লাহু আকবর বলে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়বেন।
  3. তারপর দুইবার কান পর্যন্ত হাত তুলে তৃতীয় বার হাত বাঁধা। প্রত্যেক তাকবীরের পর তিনবার সুবহানআল্লাহ বলা যায় এমন পরিমাণে বিরতি নেওয়া।
  4. তারপর আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পরে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে একটি সূরা মিলিয়ে পড়া
  5. তারপর তিনবার আল্লাহু আকবার বলার মাধ্যমে তিন তাকবীর সম্পন্ন করা।
  6. এখানে প্রতি তাকবীর দেওয়ার পর হাত ছেড়ে দিতে হবে এবং চতুর্থবার তাকবীর দিয়ে সরাসরি রুকুতে চলে যেতে হবে।
  7. সবশেষে সেজদা এবং আখেরী বৈঠক করে যথারীতি সালাম ফিরিয়ে ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষ করতে হবে।

প্রিয় পাঠক আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়তে হয়। আমি সহজ করে বুঝিয়ে দিলাম যদি না বোঝেন বা কোনো জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন অবশ্যই।

ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবীতে জেনে নিন

ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়মঃ ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে নামাজের নিয়ত করতে হয়। তাই আমাদের ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত মুখস্ত করতে হবে। নিচে ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবীতে দেওয়া হলো।

نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْعِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتَّةِ تَكْبِرَاتِ وَاجِبُ اللَّهِ تَعَالَى اِِقْتَدَيْتُ بِهَذَا اْلاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলায় উচ্চারণ : নাওয়াইতু-আন উসল্লিয়া লিল্লাহি-তাআলা রকা-আতাই সলাতিল ঈদুল ফিতর মা-আ সিত্তাতি তাকবিরতি- ওয়াজিবুল্লাহি তাআলা ইক্বতাদাইতু বিহা-যাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা-বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলায় অনুবাদ : আমি ক্বিবলামুখী হয়ে আল্লাহ-পাকের সন্তুষ্টির জন্য ছয় তাকবীরের সাথে ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব নামায এই ইমামের পিছনে আদায় করছি 'আল্লাহু আকবার'।

ঈদুল ফিতরের নামাজের কিছু গুরুত্বপূর্ন মাসআলা জানা রাখা ভালো

ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম জানার পাশাপাশি আমাদের কে ঈদুল ফিতরের নামাজের কিছু মাসআলা জানা উচিত। ঈদুল ফিতরের নামাজে ইমাম সাহেব জুম্মার নামাজের মত দুইটি খুতবা দিবেন। ঈদের নামাজের খুতবা হলো সুন্নত। ঈদের খুতবা শুনা ওয়াজিব। 

খুতবা চলাকালীন মনোযোগ সহকারে খুতবা শোনা ওয়াজিব ওই সময় অমনোযোগী হওয়া বা টাকা তোলা যাবে না। ঈদের নামাজের ক্ষেত্রে সম্ভব হলে এলাকার সকলে একত্রে এক স্থানে জামাতে নামাজ পড়া উত্তম। 

তবে, কয়েক জায়গায় ভাগ করে নামাজ পড়াও জায়েজ আছে। ঈদের নামাজ জামাতে আদায় করতে হয় তাই নামাজ ছুটে গেলে বা নষ্ট হলে কাজা করা যাবে না বা পুনরায় পড়া যাবে না। 

তবে, যদি একাধিক ব্যক্তির নামাজ না হয় তাহলে নতুন একজনকে ইমাম তৈরি করে নামাজ আদায় করা যায়। 

অনেকসময় নামাজে আসতে আসতে দেখা যায় ইমাম দ্বিতীয় রাকাতে চলে গেছেন এমতবস্থায় যে ব্যাক্তির নামাজ ছুটে গেছে ওই ব্যাক্তি ছুটে যাওয়া রাকাতের [প্রথম রাকাত] জন্য দাঁড়াবে।

প্রথমে সানা [সুবহানাকাল্লাহুম্মা] সম্পূর্ন পড়বে, তারপর আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতেহা ও অন্য যেকোনো সূরা পড়ার পর রুকুর পূর্বে তাকবির বলবে। সূরা ফাতেহা পড়ার আগে তাকবীর না দেওয়া। 

ইমাম তাকবীর দিতে ভুলে গেলে রুকুতে গিয়ে বলবে কিন্তু রুকু ছেড়ে দাড়ানো যাবে না। তবে রুকু ছেড়ে তাকবীর বলে আবার রুকুতে গেলে নামাজ নষ্ট হবে না। বেশি লোক হওয়ায় সাহু সিজদা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাবার সময় আস্তে আস্তে এই তাকবীর পড়তে থাকা এবং ঈদের নামাজের স্থান অব্দি পড়তে থাকা। 

اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ

উপরোক্ত তাকবীর টি ঈদের নামাজের উদ্দেশে যাওয়ার পথে আস্তে আস্তে [মনে মনে নয়] পড়তে থাকা। আশা করি আজকের পোস্ট টি পড়ে আপনারা জানতে পারলেন ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে। 

আমাদের ওয়েবসাইট এ আরও অনেক পোস্ট রয়েছে আপনারা সেগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। আপনারা চাইলে আপনাদের লেখাও আমাদের এখানে দিতে পারেন। 

এর জন্য যোগাযোগ পৃষ্ঠা থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আজকের পোস্টের উপরে কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কে কমেন্ট করে জানাবেন। আজ এই পর্যন্তই, খোদা হাফেয।


Telegram GroupJoin Now
Facebook PageFollow Now
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
Facebook Page
telegram
প্রিমিয়াম সাজেশন গ্রুপ [9 to 12]

আপনি যদি ৫ম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে নিচের দেওয়া গ্রুপে জয়েন করুন। এই গ্রুপে সকল প্রিমিয়াম সাজেশন এবং নোট পেয়ে যাবেন। আশা করি আপনার পরীক্ষায় অনেক উপকার হবে।

গ্রুপ : এখানে ক্লিক করুন