চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ২০২৩ | Chakrir dorkhasto lekhar niom 2023
চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ২০২৩ | Chakrir dorkhasto lekhar niom 2023
চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম |
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আশা করি সুস্থ আছেন। আপনি নিশ্চই চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন।
তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই। আজকের নিবন্ধে আমরা আলোচনা করবো চাকরির দরখাস্ত লেখার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে।
তাই আপনার নিকট আমার বিনীত অনুরোধ যে সম্পূর্ন পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পরবেন। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই কিভাবে একটি চাকরির দরখাস্ত লিখতে হয়।
চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ২০২৩
চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম কি? চাকরির আবেদন করতে আমাদের ওই চাকরির জন্য দরখাস্ত বা আবেদন পত্র লিখতে হয় আর সেই দরখাস্ত বা আবেদন পত্রই হলো চাকরির দরখাস্ত বা আবেদন পত্র।
আজকের আমরা চাকরির দরখাস্ত লেখার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করবো। আমরা যে বিষয় নিয়ে জানবো তা হলো : চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম গুলো কি কি, চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ডেমো, চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম সংক্ষেপে, এনজিও চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম, স্কুলে চাকরির জন্য দরখাস্ত লেখার নিয়ম, কোম্পানিতে চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম, চাকরির দরখাস্ত খাম লেখার নিয়ম, সরকারি চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ইত্যাদি বিষয়ে।
চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম ধাপে ধাপে আলোচনা
একটি আদর্শ চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম গুলো নিচে ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হলো।
১/ তারিখ : চাকরির দরখাস্ত লেখার শুরুতেই আপনাকে তারিখ লিখতে হবে। আপনি যখন আপনার আবেদনটি করবেন সেই দিনের তারিখ দিতে হবে। আপনি দিন/মাস/বছর আকারে তারিখ লিখতে পারেন। যেমন: ১০/১২/২০২৩ বা ১০ ডিসেম্বর ২০২৩.
২/ বরাবর : আপনি যার কাছে আবেদন করবেন তার পদের নাম এখানে দিতে হবে। অর্থাৎ তারিখের পরপরই বরাবর এর কাজ। আপনি যদি কোম্পানির চাকরির দরখাস্ত লেখেন তাহলে বরাবর হতে পরে ম্যানেজার কিংবা পর্যবেক্ষক। আবার আপনি যদি সরকারি চাকরির জন্য দরখাস্ত লিখেন তাহলে বরাবর হতে পারে প্রধান শিক্ষক বা সচিব মহোদয় ইত্যাদি।
৩/ বিষয় : দরখাস্তের একটি প্রধান এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ন অংশ হলো বিষয় লেখা। বিষয় হলো আপনার আবেদন টির প্রধান উদ্দেশ্য বা কি কারণে আপনি আবেদন করতেছেন সেটি এক লাইনে লিখতে হবে বিষয়ে। যেমন : অফিস সহকারী পদে চাকরির জন্য আবেদন, সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির জন্য আবেদন, ম্যানেজার পদে চাকরির জন্য আবেদন ইত্যাদি।
৪/ জনাব সম্মন্ধন করা : জনাব সম্মন্ধ করে আবেদন পত্রের মূল অংশ লেখা। বিষয়ের পর জনাব লিখে আপনার আবেদনের বিষয়ে ব্যাখ্যা করুন। এটি এক পাতায় লিখত হবে। অপ্রয়োজনীয় কোনো কথা লেখা থেকে বিরত থাকুন।
৫/ নিবেদক : দরখাস্তের মূল অংশ লেখার পর একদম শেষ অংশে নিবেদক অর্থাৎ যিনি আবেদন টি করছেন তার নাম ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্যাবলী দিতে হবে। এমন কিছু তথ্য দিন জাতে দরখাস্তটি কে আবেদন করেছে তা সহজেই বোঝা জায়।
৬/ জীবন বৃত্তান্ত : চাকরির দরখাস্ত লেখার ক্ষেত্রে আমাদের জীবন বৃত্তান্ত সংযুক্ত করতে হবে। নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, ধর্ম, বৈবাহিক অবস্থা, জাতীয়তা, জন্ম, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি প্রয়োজনীয় তথ্য এই জীবন বৃত্তান্ত তে লিখতে হবে।
৭/ সংযুক্তি : চাকরির আবেদন করার সময় আপনার তথ্যের সত্যতা যাচাই করার জন্য আপনাকে দরখাস্তের সাথে কিছু সত্যায়িত কাগজ পত্র জমা দিতে হবে বা সংযুক্ত করতে হবে। যেমন: পাসপোর্ট সাইজের ছবি, NID কার্ডের ফটোকপি, অন্নানি প্রমাণাদি।
এভাবে একটি আদর্শ চাকরির দরখাস্ত লেখা হয়। উপরের নিয়মগুলো অনুসরন করে আপনি আপনার চাকরির দরখাস্ত টি তৈরি করুন বা সাজিয়ে নিন।
আশা করা যায় আপনার দরখাস্তটি গ্রহণযোগ্য হবে। চাকরির দরখাস্ত সুন্দর না হলে আপনি চাকরির যোগ্যতাও হারাতে পারেন।
তাই আপনাকে সঠিক নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে হবে যদি আপনি চাকরির দরখাস্ত লেখায় সফল হতে চান।
স্কুলে চাকরির জন্য দরখাস্ত লেখার নিয়ম ডেমো
ধরুন, কোনো বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আপনি সেই সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করতে চান। এর জন্য আপনাকে নিম্নরূপ একটি চাকরির দরখাস্ত লিখতে হবে।
সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির জন্য দরখাস্ত লেখার নিয়ম
১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং
বরাবর,
প্রধান শিক্ষক,
ফরিদপুর পুলিশ লাইন্স হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ফরিদপুর।
বিষয়: সহকারি শিক্ষক পদের জন্য আবেদন।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, গত ৩ ডিসেম্বর ২০২3 তারিখে " দৈনিক চাকরির বাজার " নামক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি থেকে জানতে পারলাম যে, আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। উক্ত পদের জন্য আমি একজন আগ্রহী প্রার্থী হিসেবে আমার জীবন বৃত্তান্ত (CV) এবং অন্যান্য তথ্যাবলী নিচে লিপিবদ্ধ করলাম।
জীবন বৃত্তান্ত
১. নাম: মো. কবির উদ্দিন
২. পিতার নাম: মো. জসিম উদ্দিন
৩. মাতার নাম: মাজেদা বেগম
৪. স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: নগরকান্দা, ডাকঘর ও থানা: জঙ্গুর্দি, জেলা: ফরিদপুর, বিভাগ: ঢাকা।
৫. বর্তমান ঠিকানা: গ্রাম: চনমারি, ডাকঘর ও থানা: ফরিদপুর, জেলা: ফরিদপুর, বিভাগ: ঢাকা।
৬. জন্ম তারিখ: ১৩ ডিসেম্বর, ১৯৯৪
৭. জাতীয়তা: বাংলাদেশী
৮. ধর্ম: ইসলাম
৯. বৈবাহিক অবস্থা: অবিবাহিত
১০. শিক্ষাগত যোগ্যতা:
এস এস সি - ২০০৪ - ঢাকা - ৫.০০
এইচ এস সি - ২০০৬ - ঢাকা - ৫.০০
বি এস সি - ২০০৯ - ঢাকা - ৪.০০
এম এস সি - ২০১৯ - ঢাকা - ৪.০০
১১. অভিজ্ঞতা: আমি ডিসেম্বর ২০১৭ থেকে ‘সরকারি আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফরিদপুর’ এর সহকারী বিজ্ঞান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি।
অতএব, জনাবের নিকট আমার বিনীত আবেদন এই যে, আমার জীবন বৃত্তান্ত এবং অন্যান্য তথ্যাবলী যাচাই বাছাই করে আমাকে উক্ত সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি দিয়ে চিরকৃতজ্ঞ করে বাধিত করবেন।
নিবেদক,
মো: কবির উদ্দিন
সংযুক্তি:
১. সকল সার্টিফিকেট ও প্রশংসা পত্র সমূহের সত্যায়িত ফটোকপি।
২. প্রথম শ্রেণীর গ্যাজেট কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত দুই কপি চারিত্রিক সার্টিফিকেট কপি।
৩. নিজের ২ কপি পার্সপোট সাইজের সত্যায়িত ছবি।
৪. ব্যাংক ড্রাফট/ পে-অর্ডার স্লিপ।
এভাবে একটি আদর্শ চাকরির দরখাস্ত লিখতে হবে। নিয়ম মেনে চাকরির দরখাস্ত লিখলে আশা করা যায় সেই দরখাস্তটি গ্রহণযোগ্য হবে।
সরকারি চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম সংক্ষেপে জেনে নেই
সরকারি চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম হলো প্রথমে তারিখ, বরাবর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিষয় লিখে জনাব সম্মন্ধন করে আবেদন পত্র লিখতে হবে।
এরপর জীবন বৃত্তান্ত যুক্ত করে সরকারি চাকরির দরখাস্ত লেখার সমাপ্তি ঘটাতে হবে। সরকারি চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম উপরের মতই শুধু বিষয় ও অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয় পার্থক্য থাকতে পারে।
আপনি সৃজনশীলতার সাথে তা বুঝে নিতে পারেন। উপরের নিয়মগুলো অফিসিয়াল আবেদন পত্র লেখার সঠিক নিয়ম। উক্ত নিয়মগুলো মেনে যেকোনো অফিসিয়াল চাকরির দরখাস্ত লেখা যাবে।
কোম্পানিতে চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম সংক্ষেপে
কোম্পানিতে চাকরির দরখাস্ত লিখার নিয়ম হলো তারিখ দিয়ে শুরু করতে হবে এবং বরাবর কোম্পানির প্রধান তারপর বিষয় কোম্পানিতে চাকরির জন্য আবেদন লিখে জনাব সন্মন্ধন করে উপরের নিয়ম মতো একটি দরখাস্ত তৈরি করতে হবে।
কোম্পানির চাকরির দরখাস্ত আর চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম একই শুধু বরাবর এবং আবেদনের মধ্যে সামান্য পার্থক্য। তাছাড়া জীবন বৃত্তান্ত সহ অন্যান্য সব একই রকম থাকবে।
এনজিও চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম সংক্ষেপে জেনে নেই
এনজিও তে চাকরির আবেদন করতে গেলে আপনাকে চাকরির দরখাস্ত লিখতে হয়। এনজিও এর জন্য চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম আর এমনি চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম একই রকমের হয়ে থাকে।
শুধুমাত্র বরাবর বিষয় ও আবেদনের ভিতরে কিছু পার্থক্য থাকতে পারে। তাছাড়া চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়মের মতই এনজিও এর দরখাস্ত লিখতে হয়।
চাকরির দরখাস্ত খাম লেখার নিয়ম জেনে নেই
চাকরির দরখাস্ত খাম লেখার নিয়ম হলো খামে দুইটি অংশ থাকবে বাম দিকে অর্থাৎ প্রথম খন্ড প্রেরক এর নাম ঠিকানা থাকবে এবং ডান পাশে বা দ্বিতীয় খন্ডে প্রাপক এর নাম ঠিকানা দেওয়া থাকবে। নিচে চাকরির দরখাস্ত খাম লেখার নিয়মের একটি নমুনা দেওয়া হয়েছে।
চাকরির দরখাস্ত খাম লেখার নিয়ম |
আমাদের শেষ কথা
আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে একটি আদর্শ চাকরির দরখাস্ত লিখতে হয়। আমরা চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারলাম।
আজকের পোস্টটি যদি আপনার কাছে উপকারী মনে হয় তাহলে পোস্টের লিঙ্ক কপি করে আপনার ফেসবুক আইডিতে একটা পোস্ট করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।
চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে কোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে আমাদের জানাত ভুলবেন না। আজকে এই পর্যন্তই আল্লাহ হাফেজ।
Telegram GroupJoin Now
Facebook PageFollow Now
"চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম"
https://www.teplive.com/2023/04/chakrir-dorkhasto-lekhar-niom.html