পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় (৮ টি ঘরোয়া উপায়)
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় |
আপনি কি পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত ব্যাথা অনুভব করেন? আপনার কি পিরিয়ডের সময় অসহ্য ব্যাথা হয়? আপনি কি পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় জানতে চান? তাহলে এই পোস্ট টি আপনার জন্যই। আজকের পোস্ট টি পড়লে আপনি পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
তাই মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পোস্ট টি পড়ুন।পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়ঃ প্রত্যেক নারীকেই পিরিয়ডের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের পিরিয়ডের সময় অসহ্য ব্যাথা হয়। পিরিয়ডের সময় ব্যাথা অনেকসময় কম আবার অনেক সময় বেড়ে যায়। তবে আমরা যদি কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করি তাহলে পিরিয়ডের সময়কালীন ব্যাথা কমানো সম্ভব। আজকে আমরা সেই সম্পর্কেই জানবো।
পিরিয়ড কি পিরিয়ডের ব্যাথা কেন হয়?
অনেকেই আছেন যারা পিরিয়ড সম্পর্কে জানেন না বা কম জানেন। তাই আমাদের সবারই উচিত এই সম্পর্কে পূর্ণজ্ঞান রাখা। তাই প্রথমেই জেনে নেই পিরিয়ড কি এবং পিরিয়ডের ব্যাথা কেন হয়?
পিরিয়ড কিঃ সাধারণত মেয়েরা সাবালক হলে প্রতি চন্দ্রমাস পরপর হরমোন জনিত কারনে মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে পরিবর্তন হয় এবং রক্ত ও জরায়ু থেকে নিঃসৃত অংশ যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে। এই জৈবিক প্রক্রিয়াকেই মুলত পিরিয়ড বলা হয়ে থাকে। অনেকে একে ঋতুচক্র বা মাসিক ও বলে থাকেন। পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে অসহ্য পেটব্যাথা, পিঠব্যাথা, বমি বমি ভাব হতে পারে। এছাড়াও মাথাব্যাথা, খিটখিট মেজাজ, তলপেট ব্যাথা, শরীর ব্যাথা, জ্বর ও দেখা দেয় এই সময়।
পিরিয়ডের ব্যাথা কেন হয়ঃ প্রতিটি নারীর জন্য পিরিয়ড একটি গুরুত্বপূর্ণ চক্র। এটি নারীদের মা হওয়ায় ভূমিকা রাখে। মাতৃ প্রজননের সঙ্গে সম্পর্কিত হরমোন গুলোর হটাত করে কমে যায় আর এই হরমোন স্বল্পতার কারনে মাসিক/পিরিয়ড শুরু হয়। এই চক্রে জরায়ুর ভিতরের আস্তরণটি ঝরে পড়ে রক্তের সাথে বের হয়ে যায়। আর এই আস্তরণ টি খসানোর জন্য জারায়ুর দেয়াল অনেক জোরে সংকোচন হয়। এই সংকোচনে জরায়ুর দেয়ালে থাকা রক্তনালীগুলো চেপে যায় যার কারনে অক্সিজেন এবং রক্ত সরবরাহ বন্ধ থাকে। এসব কারনে পিরিয়ডের সময় অসহ্য ব্যাথার সৃষ্টি হয়।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় জেনে নিন
পিরিয়ডের ব্যাথা সহ্য করার ক্ষমতা প্রতি নারীর মধ্যে সৃষ্টিকর্তা দিয়ে দিয়েছেন। আমরা তারপরও যদি কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করি তাহলে এই ব্যাথা অনেকটাই প্রসম হবে।
এক নজরে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় গুলো হলোঃ
- পর্যাপ্ত ঘুম দেওয়া
- পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা
- জোয়ান সিদ্ধ পানি পান করা
- গরম পানি দিয়ে গোসল করা
- চকলেট খাওয়া
- গরম পানির সেঁক নেওয়া
- ঢিলা পোশাক পরিধান করা
- পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
পর্যাপ্ত ঘুম দেওয়া
পর্যাপ্ত ঘুম |
এই সময় অনেকেই সাধারণত পর্যাপ্ত ঘুমায় না যার কারনে শরীর আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। অন্যান্য সময় আর পিরিয়ডকালীন সময় একভাবে চলা উচিত নয়। এই সময়ে আমাদের পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন হয়। তাই প্রথমত আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমাতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমানে পানীয় পান করা
পর্যাপ্ত পরিমানে পানীয় পান করা |
এই সময়ে পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করুন। এছাড়াও বেশি বেশি শরবত খান, ফল, শাকসবজি খান, পুষ্টিকর খাবার খান। তবে, দুথ বাদ দিয়ে আদা দিয়ে লাল চা খেতে পারেন। বিশেষ করে তেল ও মশলাযুক্ত খাবার, অ্যালকোহল এবং কার্বনেটেড তরল খাবার খাবেন না।
জোয়ান সিদ্ধ পানি পান করুন
জোয়ান এর মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে, যা পিরিয়ডের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া এই সময় হজম শক্তি কম থাকার কারনেও ব্যাথার প্রবনতা বৃদ্ধি পায়। তাই হজমশক্তি বাড়াতে কিছু জোয়ান গরম পানিতে সিদ্ধ করে তারপর সেই পানি পান করুন।
গরম পানি দিয়ে গোসল করুন
গরম পানি দিয়ে গোসল করুন |
পিরিয়ডের ব্যাথা কমাতে গরম পানি দিয়ে গোসল করা যেতে পারে। এছাড়াও গরম পানি দিয়ে গোসল করলে মেজাজ ও ভালো হয়। তবে অবশ্যই কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করবেন।
চকলেট খান
চকলেট খান |
পিরিয়ড এর সময় চকলেট খেলে আপনার মেজাজ ভালো থাকবে এবং পিরিয়ডের ব্যাথা কমে যাবে। তাই আপনার পছন্দের চকলেট গুলো খেতে পারেন। ডেইরী মিল্ক, চকো মিল্ক ইত্যাদি চকলেট পিরিয়ডের ব্যাথা কমানোর অন্যতম উপায় গুলোর একটি।
গরম পানির সেঁক নিন
গরম পানির সেঁক নিন |
এই সময়ে গরম পানির সেঁকে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। হট ওয়াটার ব্যাগ এর মধ্যে হালকা গরম পানি ভরে তারপর আস্তে আস্তে আপনার তলপেটের নিচে সেঁক নিতে পারেন। আপনার যদি হট ওয়াটার ব্যাগ না থাকে তাহলে বোতলের মধ্যে হাল্কা গরম পানি ভরে বোতল টি একটি কাপরে পেচিয়ে সেঁক নিতে পারেন।
ঢিলা পোশাক পরিধান করুন
ঢিলা পোশাক পরিধান করুন |
এই সময় আঁটসাঁট বা চাপা পোশাক পড়বেন না। এই সময়ে ঢিলাঢালা পোশাক পড়ে আরাম পাবেন। জিন্স এর প্যান্ট পড়া থেকে বিরত থাকুন।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ
এই সময়ে পুষ্টিকর খাবার গ্রহন পিরিয়ডের ব্যাথা কমাতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গুলো রাখুন। এছাড়াও এই সময়ে পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি ডার্ক চকলেট, কলা, পালংশাক, ব্রকলি, কমলালেবু, গ্রিন টি, বাদাম ইত্যাদি খেলে পিরিয়ডের ব্যাথা উপশম হয়।
উপরোক্ত এই ঘরোয়া উপায় গুলো অনুসরণ করলে আশা করা যায় আপনার পিরিয়ডকালীন ব্যাথা অনেকটাই কমে যাবে। এছাড়া আপনার যদি একেবারেই অসহ্য ব্যাথা উঠে বা অতিরিক্ত রক্তপাত ঘটে বা অনিয়মিত মাসিক হয় তাহলে অবশ্যই দ্রুত নিকটস্থ অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আজকের পোস্টের বিষয় ছিল "পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়"। অনেকেই গুগোলে সার্চ করেন কিভাবে পিরিয়ডের ব্যথা কমানো যায়। এছাড়াও আমাদের কে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে যে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় গুলো কি কি। ঘরোয়াভাবে কিভাবে পিরিয়ডের ব্যথা কমানো যায়। আশা করি এসকল প্রশ্নের উত্তর ইতিমধ্যেই এই পোস্টে পেয়ে গেছেন। আগামীতে এই বিষয় নিয়ে আমরা আরও কিছু আপনাদের জানাবো, তাই আমাদের ওয়েবসাইট টি নিয়মিত বা সময় পেলে আমাদের আপডেট পোস্ট গুলো দেখতে পারেন। আজকের পোস্ট সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আজ এই পর্যন্তই, খোদা হাফেজ।
Telegram GroupJoin Now
Facebook PageFollow Now