জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় ২০২৪ | জ্বর হলে করণীয় কি জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আপনি কি জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে টেপলাইভ এর আজকের পোস্ট টি আপনাকে জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানাতে সহযোগিতা করবে।
অনেক সময় আমাদের শরীরে জ্বর ভাব দেখা দেয়, আর বেশি খারাপ অবস্থা না হলে কিংবা হাসপাতালে যাওয়ার সুযোগ না থাকলে আমরা ঘরে থাকা অবস্থায় বা প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে করণীয় কি তা জানিনা।
আজকের পোস্টে আমরা সেই সকল প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করেছি এবং জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমরা জেনে নেই জ্বর কমানোর জন্য কি করা যেতে পারে।
জ্বর কেন হয় সংক্ষেপে জেনে নেই
জ্বর হল শরীরের তাপমাত্রায় সাময়িক বৃদ্ধি, সাধারণত সংক্রমণ বা অসুস্থতার প্রতিক্রিয়ায় জ্বর হতে দেখা যায়।
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করার জন্য এটি শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, কারণ অনেক প্যাথোজেন শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সবচেয়ে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে।
যখন ইমিউন সিস্টেম আক্রমণকারীকে সনাক্ত করে, তখন এটি রাসায়নিক পদার্থের মুক্তির সূত্রপাত করে যা শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়।
যা আক্রমণকারী জীবের বৃদ্ধিকে বাধা দিতে এবং ইমিউন প্রতিক্রিয়াকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করতে পারে। জ্বরের সাথে প্রায়ই ঠাণ্ডা লাগা, ঘাম, মাথাব্যথা এবং পেশী ব্যথার মতো উপসর্গ থাকে।
জ্বর হলে কি লক্ষণ দেখা যায়, জ্বরের প্রাথমিক লক্ষণ সমূহ
জ্বর হলে তার কিছু লক্ষণ প্রকাশিত হয়। আর সেই লক্ষণ গুলো চেনার মাধ্যমে আমরা জ্বর এর মাত্রা ও গতিবিধি সম্পর্কে আন্দাজ করতে পারি। নিচে জ্বরের সাধারন লক্ষণ গুলো দেওয়া হয়েছে।
- শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়
- ঘাম উৎপন্ন হতে পারে
- ঠান্ডা লাগা বা কাঁপুনি হতে পারে
- মাথা ব্যাথা হতে পারে
- ক্লান্তি ভাব দেখা দিতে পারে
- ক্ষুধামান্দ্য দেখা দিতে পারে
- পানিশূন্যতা হতে পারে
- বিরক্তি বা বিভ্রান্তি ভাব দেখা যায় (বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে)
জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় জেনে রাখুন
জ্বর কমাতে সাহায্য করার জন্য এখানে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে যেগুলো আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছি। আসা করি আপনার উপকারে আসবে।
মাথায় পানিপট্টি দিন
জ্বর হলে শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমানোর অন্যতম কার্যকরী পদ্ধতি হলো জলপট্টি দেওয়া। সেজন্য একটি পরিষ্কার রুমাল ভাঁজ করে সেটি পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে নিন।
এরপর ভেজা রুমালটি রোগীর কপালের উপর দিয়ে রাখতে হবে। এভাবে মিনিট দুয়েক পর রুমালটি পুনরায় ভিজিয়ে একইভাবে কপালের উপর দিয়ে রাখতে হবে।
এভাবে কয়েকবার করলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। রুমাল বেশি ভেজানো যাবে না, পানি গড়িয়ে কানে যেতে পারে সেইদিকে খেয়াল রাখবেন।
বিশুদ্ধ পানি পান করুন
ডিহাইড্রেশন রোধ করতে প্রচুর পরিমাণে তরল যেমন জল, ভেষজ চা বা ইলেক্ট্রোলাইট দ্রবণ পান করুন।
এতে করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং শরীরের তাপমাত্রা বজায় থাকবে। মুত্র ত্যাগের কারনে ক্ষতিকর বস্তু শরীর থেকে বের হয়ে যাবে। তাই তরল জাতীয় খাবার ও তরল পান করতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমানে বিশ্রাম নিন
আপনার শরীরকে পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রচুর বিশ্রাম নিন। শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করার জন্য আপনার কপাল, কব্জি এবং গোড়ালিতে একটি ঠান্ডা, স্যাঁতসেঁতে ওয়াশক্লথ লাগান।
হাত পা মোছা এবং উষ্ণ স্নান করুন
জ্বর কমাতে সাহায্য করার জন্য একটি উষ্ণ স্নান বা স্পঞ্জ স্নান করুন। এর জন্য মাথায় পানি ঢালতে পারেন, এরপর হাত-পা সহ সারা শরীর ভেজা চিপরানো তোয়ালে দিয়ে মুছে নিতে পারেন। এতে জর অনেকটাই কমে যাবে।
ভেষজ চা পান করুন
আদা, পেপারমিন্ট বা ক্যামোমাইলের মতো উপাদান সহ ভেষজ চা ব্যবহার করে দেখুন, যা জ্বর কমাতে এবং উপসর্গগুলি উপশম করতে সাহায্য করতে পারে। জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়ের অন্যতম একটি এটি।
ঠাণ্ডা থাকার চেষ্টা করুন
ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক রাখুন এবং অতিরিক্ত গরম হওয়া রোধ করতে ওভারড্রেসিং এড়িয়ে চলুন। অর্থাৎ গায়ে জামা কাপর বেশি থাকলে যথাসম্ভব কমিয়ে নিন। আবার বেশি শীত লাগলে কাথা গায় দিতে পারেন।
রসুন খেতে পারেন
রসুন খাওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং এর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে জ্বর কমাতে সাহায্য করতে পারে।
এর জন্য এক বা দুই কোয়া রসুন নিয়ে চিবিয়ে বা রস নিয়ে খেতে পারেন। সমস্যা হলে সাথে হালকা লবন নিতে পারেন। রসুন এর রস রোগ প্রতিরধের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
আপেল সাইডার ভিনেগার খান
জলে আপেল সিডার ভিনেগার পাতলা করে পান করুন জ্বর কমাতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে। আশা করি এতে অনেকটাই সুস্থতা বোধ করবেন।
মধু এবং লেবু পান করুন
গরম জলে মধু এবং লেবু মিশিয়ে পান করুন এবং গলা ব্যথা এবং জ্বর কমাতে পান করুন। এছাড়াও ডিম সিদ্ধ করে খেতে পারেন।
জ্বর হয় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে। সেহুতু ডিম, দুধ, মধু এসব খেলে শরীর অনেকটাই রিকভার করে নেওয়া যায়।
হলুদের দুধ তৈরি করে পান করুন
হলুদে রয়েছে কারকিউমিন, যার রয়েছে প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট্য। গরম দুধের সাথে হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন জ্বর কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে।
মনে রাখবেন, যদি জ্বর চলতে থাকে বা খারাপ হয়ে যায়, তাহলে সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে পরামর্শ করুন
পরিশেষে আমাদের কথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাইয়েছি।
আজকের আর্টিকেল সম্পর্কিত যদি কোন কিছু জানার বা বলার থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
রোগ হলে আল্লাহর নিকট সুস্থতা কামনা করবেন, ইনশাল্লাহ আল্লাহ্ সহায় হবেন। আজ এই পর্যন্তই রইলো, আল্লাহ্ হাফেজ।
Telegram GroupJoin Now
Facebook PageFollow Now